ফারজানা ব্রাউনিয়া একজন বাংলাদেশি মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, প্রযোজক, পরিচালক ও সংবাদ উপস্থাপিকা। পাশাপাশি নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্যও তিনি সমধিক পরিচিত। সম্প্রতি তার চতুর্থ বিয়ে নিয়ে দর্শক মহলে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছেন এই মিডিয়া কর্মী।
১৯৮১ সালের ১৭ মার্চ রাজধানী ঢাকার এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ফারজানা ব্রাউনিয়া। ছোটবেলা থেকে পরিবারের সাথেই বেড়ে উঠেন তিনি৷
প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ চুকিয়ে ফারজানা ভর্তি হন প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স এবং মাস্টার্স সম্পন্ন করে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে পাড়ি জমান ফারজানা। সেখানকার ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ থেকে এমবিএ শেষ করেন তিনি।
ছোটবেলা থেকেই ব্রাউনিয়ার স্বপ্ন ছিল সংবাদ উপস্থাপিকা হওয়ার৷ স্নাতক শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায়ই তার এই স্বপ্ন পূরণ হয়। ২০০০ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) এ ইংরেজি সংবাদ পাঠিকা হিসেবে যোগ দেন তিনি। কিছুদিন পরই পেয়ে যান উপস্থাপনার দায়িত্ব। বিটিভির ‘নবাগত’ অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনা শুরু করেন ফারজানা। পরবর্তীতে যোগ দেন চ্যানেল আইয়ে। গেম শো লেটস মুভ, রাজনীতিভিক্তিক শো হাঁড়ি কড়াই রান্নার লড়াই, চ্যানেল আই সেরা কণ্ঠ ইত্যাদি অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন ফারজানা। তার ‘ আমি মা হতে চলেছি’ অনুষ্ঠানটি দর্শকমহলে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল। অনেক বাধা বিপত্তির পরেও এই অনুষ্ঠানের চল্লিশটি পর্ব সম্পন্ন করেন তিনি। এছাড়াও বেশকিছু দিন বেসরকারি টিভি চ্যানেল ‘ইটিভি’তেও কাজ করেছেন ফারজানা ব্রাউনিয়া।
নানা ধরনের সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথেও যুক্ত আছেন ফারজানা ব্রাউনিয়া। ‘স্বর্ণকিশোরী নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশন’ নামক একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্বরত আছেন এই মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। নিরাপদ মাতৃত্ব অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে ২০১২ সালে যাত্রা শুরু করা এই সংগঠনটি চলতি বছরের অক্টোবরে ১ দশক পূর্ণ করবে। সারাদেশে স্বর্ণ কিশোরীর ৫ হাজার ক্লাব আছে প্রতি ক্লাবে ৩০ জন করে সদস্য রয়েছে। এছাড়াও নারীদের বাল্যবিবাহ রোধ, নারী শিক্ষার প্রসার ও সমান অধিকারের বিষয়েও মিডিয়া পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
শুধু উপস্থাপক এবং সংগঠকই নন, ফারজানা ব্রাউনিয়া একজন নির্মাতাও। ২০০৬ সালে নির্মিত তার ‘চান্স ৫০-৫০‘ খুবই আলোচিত হয়। বর্তমানে পিএইচডি গবেষক হিসেবে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এ কর্মরত আছেন ফারজানা ব্রাউনিয়া।
২০১৮ সালের শেষদিকে সেনা কর্মকর্তা লে. জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ফারজানা ব্রাউনিয়া। এটি ছিল তার তৃতীয় বিয়ে। এর আগে আরও দু’টি এবং পরে একটি বিয়ে করেন ফারজানা। তৃতীয় বিয়ের পর স্বামীকে নিয়ে ওমরা হজ্জ পালন এবং ধর্মকর্মে মনোযোগ দিয়েছিলেন এই আলোচিত নারী উপস্থাপিকা।