চলচ্চিত্র অভিনেতা জায়েদ খানের জীবনী

সম্প্রতি মিডিয়া জুড়ে বেশ আলোচিত একটি নাম, জায়েদ খান। যিনি পেশায় একজন চলচ্চিত্র অভিনেতা এবং প্রযোজক। ২০০৬ সালে নতুন মুখের সন্ধানে প্রথম নির্বাচিত হওয়ায় চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি।
বাংলাদেশী এই অভিনেতার জন্ম পিরোজপুরে। তার বাবার নাম এম এ হক এবং মা শাহিদা হক। ১৯৯৫ সালে, এসএসসি পাস করার পর ঢাকায় আসেন জায়েদ । ভর্তি হন ঢাকা সিটি কলেজে। তখন তিনি থাকতেন মধুমিতা সিনেমা হলের পেছনে বোনের বাসায়। ১৯৯৭ সালে, সিটি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে। সেখান থেকেই স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। তারা চার ভাইবোন এবং সকলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেছেন। যার কারণে ২০১২ সালে, জায়েদ খানের মা ‘রত্নগর্ভা’ হিসেবে পুরস্কৃত হন।
নতুন মুখের সন্ধানের মাধ্যমে এর আগেও ঢালিউডে নামী দামী নায়ক-নায়িকারা চলচ্চিত্রে আসেন। জায়েদ খানকে চলচ্চিত্রে সুযোগ করে দেন প্রযোজক মাহমুদ হক শামীম। তার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে বরেণ্য পরিচালক মহম্মদ হাননান এর ‘ভালবাসা ভালবাসা’ ছবির মাধ্যমে। প্রথম দিকে জায়েদ খান সহ-নায়ক হিসেবে চলচ্চিত্রে অভিনয় করলেও ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বাংলা ভাই’ চলচ্চিত্রে প্রথম নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেন। এ বছর থেকেই চলচ্চিত্রে ব্যস্ততা বৃদ্ধি পায় জায়েদ খানের এবং তিনি নায়ক চরিত্রে বিভিন্ন চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হতে থাকেন। তাঁর অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিগুলোর মধ্যে ‘ভালবাসা ভালবাসা’, ‘জমিদার বাড়ির মেয়ে’, ‘নাগনাগিনীর স্বপ্ন’, ‘পাপের প্রায়শ্চিত্ত’, ‘মন ছুঁয়েছে মন’, ‘রিকসাওয়ালার ছেলে’, ‘কাজের মানুষ’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
নিজের অবস্থান তৈরীর জন্য জায়েদ খানকে অনেক পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। বিশেষ করে, ‘বাংলা ভাই’ চলচ্চিত্রে ডামি ব্যবহার না করেই তিনি বেশ কিছু ঝুকিপূর্ণ দৃশ্যে অভিনয় করেন। ২০১৪ সালে, ‘লাভ ইন মালয়েশিয়া’ নামক চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে তিনি সমুদ্রে পড়ে যান। পরে তাকে হেলিকপ্টার দিয়ে উদ্ধার করা হয়।
যদিও ক্যারিয়ার জীবন একেবারেই কাটা মুক্ত ছিলো না জায়েদ খানের জন্যে। ২০১৪ সালে, মুক্তিপ্রাপ্ত অশ্লীলতা এবং নকলের দায়ে অভিযুক্ত ‘দাবাং’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের কারণে বেশ সমালোচিত হন জায়েদ খান। সমালোচনার প্রতিবাদ করে জায়েদ খানের ফেসবুক স্ট্যাটাস বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তিনি জানান, দাবাং মুক্তির পর দুই-তিন দিন ধরে দেখছেন ছবিটির পোস্টার ও ট্রেলার নিয়ে বিভিন্নজন তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাছে। কিন্তু তিনি এ ছবিতে কোন অশ্লীল দৃশ্যে অভিনয় করেন নি। ছবিটির গল্প যখন তাকে শোনানো হয় তখন গল্পটি ভালো ছিল এবং তিনি ভালো দৃশ্যে তার চরিত্রটিতে অভিনয় করেন। তিনি আরও দাবি করেন, এ ছবিটির তার অভিনীত অংশটুকু ছাড়া যে দৃশ্য ধারণ করা হয়, পোস্টার তৈরি করা হয় তার সব দায়দায়িত্ব পরিচালক ও প্রযোজকের। আর এ ছবির দায়দায়িত্ব সেন্সর বোর্ডকে বহন করতে হবে।’
২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর, জায়েদ খানের বাবা এমএ হক ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। গতবছর ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তার মাও পরপারে পাড়ি জমান।
জায়েদ খান ২০১৯ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে টানা দ্বিতীয়বারের মত সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। ২০২২ সালের নির্বাচনে, তাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রথমে ঘোষণা করা হলেও পরবর্তীতে ফলাফল ঘোষণার কয়েকদিন পর তার প্রার্থীতা বাতিল হয়ে যাওয়ায় নিপুণ আক্তার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। যদিও এ নিয়ে এখনো চলছে নানা বিতর্ক।