৮০০ বছরের পুরনো মমির সন্ধান পেরুতে!

মমি’ শব্দটি শুনলে প্রথমেই আমাদের মনে যে দেশটির নাম আসে সেটা হচ্ছে ‘মিসর’। হাজার হাজার বছর আগে মিসরের রাজা বা ফারাও এবং অভিজাতদের মৃতদেহ বিশেষ একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হতো। মিসরের প্রাচীন ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী, মৃত্যুর পর মানুষের দ্বিতীয় জীবন শুরু হয়। সেই জীবনে নিজ দেহ ফিরে পেতে যেন জটিলতা না হয়, সেজন্যই ফারাও ও অভিজাতদের মরদেহকে মমি করা হতো।
সম্প্রতি দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর রাজধানী লিমার কাছে একটি উপকূলবর্তী প্রাচীন সমাধিস্থল খুঁড়ে বহু বছরের পুরনো মমির সন্ধান পেয়েছেন দেশটির একদল প্রত্নতাত্ত্বিক। প্রত্নতাত্ত্বিকবিদ ইয়োমিরা জানিয়েছেন, পেরুর কাজামারকুইলা শহরে ডিম্বাকৃত গম্বুজের ভিতরে পাওয়া গেছে মমিটি। তবে স্থানটি লিমার উপকূলের কাছে । তবে এই শহরটি এখনও অবধি ইট মাটি দিয়ে তৈরি। এটা একসময় বাণিজ্যিক কেন্দ্র ছিল।
এই মমি কম করেও হলে ৮০০ বছরের পুরনো, এমনটাই জানিয়েছেন সান মার্কোসের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রত্নতাত্ত্বিকবিদ ইয়োমিরা সিলভিয়া হুমায়ুন স্যানটিলান এবং পিটার ভ্যান।
লিমার এক প্রান্তে একটি প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত ও পরিত্যক্ত মন্দিরের ভূগর্ভস্থ সমাধিস্থলে সন্ধান মেলে মমিটির। তবে সেটি পুরুষের নাকি নারীর, তা এখনও সুনির্দিষ্টভাবে জানা সম্ভব হয়নি । তবে মমিটির বয়স আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে তা জানিয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকবিদরা।
প্রত্নতাত্ত্বিক দলের মুখপাত্র পিটার ভ্যান ডালেন লুনা জানান, তারা যখন প্রথম মমিটি আবিষ্কার করেন, তখন দেখতে পান সেটির হাত-পা ছিল গোটানো, পুরো শরীর দড়ি দিয়ে বাঁধা ও হাতের তালু দিয়ে মুখঢাকা। কিন্তু এটি কি কোনো পুরুষের মমি! নাকি কোনো নারীর মমি! সে বিষয়ে তারা এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি; তবে মমিটি যেভাবে যে অবস্থায় তারা প্রথম আবিষ্কার করেন, তাতে তাদের ধারনা হয় ওই সময় এই এলাকায় এভাবেই মৃতদেহের সৎকার করা হতো।
পিটার আরো জানান, মমিটি যে ব্যক্তির, তিনি সম্ভবত আন্দিজ পার্বত্য অঞ্চলের অধিবাসী ছিলেন। কিন্তু যেহেতু তারা এখনও এটির রেডিওকার্বন ডেটিং পরীক্ষা করেননি। তাই এখনই নিশ্চিত ভাবে বলতে পারছেন না এই অনুমানের গুরুত্ব কতটুকু। তাই এই পরীক্ষা করা হলে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানান তিনি।
তবে এটাই প্রথম নয়। পেরুতে প্রায় সময় বহু বছরের পুরনো মমির সন্ধান পেয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা।