
অবশেষে দেশের মাটিতে শুরু হতে যাচ্ছে “মেইড ইন বাংলাদেশ” কারের যুগ। আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা নিয়ে আসন্ন ঈদের পরেই বাজারে আসতে যাচ্ছে দেশীয় ব্র্যান্ডের প্রথম গাড়ি “বাংলা কার”।
দীর্ঘদিন যাবৎ বাংলার বাজারে ভারতীয়, জাপানী, চায়নিজ গাড়িগুলোর আধিপত্য থাকলেও এবার বাংলার বাজারে নিজস্ব ব্র্যান্ডের গাড়ির সূচনা নিশ্চয়ই বদলে দিতে যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম জনবহুল এ দেশটির গাড়ির বাজারের চিত্র ।
আধুনিক সব সুযোগ – সুবিধা সম্বলিত সাত আসনের এ গাড়িটি দেশীয় ক্রেতারা মাত্র ত্রিশ লাখ টাকাতেই নিজেদের করে নিতে পারবেন ।
গাড়িটিকে বাজারে আনতে যাচ্ছে “হোসেন গ্রুপ অফ ইন্ড্রাস্টিজ” এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান “বাংলা কারস লিমিটেড”।
প্রাথমিক পর্যায়ে মাত্র ৩০ টি কারকেই ট্রায়াল হিসেবে রাখা হয়েছে। যার মধ্যে ১০ টি আবার অগ্রিম বিক্রিও হয়ে গিয়েছে।
সবকিছু ঠিকঠাক ভাবে এগোলে কোম্পানিটি আগামী বছরেই দেশে তৈরি এ কার গুলোকে বিদেশে রপ্তানির পথে হাটবে।
কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ভাষ্যনুযায়ী;
কোটি টাকা খরচে মার্সিডিজ-বিএমডব্লিউ গাড়িতে একজন গ্রাহক যে সুবিধা পান বাংলা গাড়িতে সে সুবিধা মিলবে মাত্র ৩০ লাখ টাকায়। ১৫০০ থেকে ২৫০০ সিসি পর্যন্ত এভেইলেবল এ গাড়িটি ৮ টি ভিন্ন রঙে পাওয়া যাচ্ছে। কাস্টমার চাইলে অবশ্য কাস্টমাইজড কালারেও গাড়িটি কিনতে পারে।
প্রাথমিক পর্যায়ে দেশের ৮ বিভাগে একটি করে শোরুম খুলতে যাচ্ছে কোম্পানিটি, যাকে শীঘ্রই ৩০ এ উন্নিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজধানীর তেজগাঁওয়ে একটি শোরুম চালু করেছে কোম্পানিটি যেখানে ৮ টি ভিন্ন রঙের বাঙালি এ ব্র্যান্ডের গাড়িটি শোভা পাচ্ছে। গাড়িগুলোর যেকোন এ-টু-জেড সার্ভিস গ্রাহক দেশের মাটিতেই পেয়ে যাচ্ছে।
কোম্পানিটি ইতিমধ্যেই সীমিত আকারে গাড়ি বিক্রি কার্যক্রম শুরু করলেও করোনা মহামারীর কারণে এখনো তা আনুষ্ঠানিক ভাবে বাজারে প্রবেশ করতে পারে নি। সব কিছু ঠিক থাকলে আসন্ন রোজার ঈদের পরেই অফিসিয়ালি কোম্পানিটি যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে।
কোম্পানিটির মূল ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানা নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটিতে। যেখান হতে ১২ ধরণের গাড়ি বাজারজাত করা হবে। এর মধ্যে প্রাইভেট কার, ট্রাক, বাস, লরি ট্রাক, পিকআপ উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশের নিজস্ব ব্র্যান্ড বাংলা কার নির্মানের জন্য হোসেন গ্রুপ যৌথভাবে ইন্দোনেশিয়া, চীন ও জাপানের সাথে কাজ করছে। গাড়িটিতে ব্যবহার করা হয়েছে জাপানি ইশুজু ইঞ্জিন, চায়নিজ বডি এবং ইন্দোনেশিয়ান চেসিস।
এ প্রসঙ্গে কোম্পানিটির এমডি বলেন, এটা বিদেশী কোন গাড়ি নয়, নিজেদের নামে, নিজেদের ডিজাইনে, নিজেদের গাড়ি প্রথমবারের মত আমরা উৎপাদন করছি।
কোম্পানিটির এমডি আশা প্রকাশ করেন, জাপানি টয়েটা, ভারতীয় টাটা, চায়নিজ হাভেলের মতই দেশীয় গাড়ির চাহিদা একদিন “বাংলা কার” মেটাতে পারবে।
কোম্পানিটি আগামী জুনেই বাজারে আনতে যাচ্ছে পিকআপ ও ট্রাক । এছাড়াও খুব শীঘ্রই ইলেট্রিক কারও বাংলার মাটিতে নিয়ে আসার ইচ্ছা রয়েছে কোম্পানিটির।
একদিন দেশের প্রতিটা গাড়িতেই “মেইড ইন বাংলাদেশ ” লেখা সেখার স্বপ্ন নিয়ে কোম্পানিটির এমডি বলেন আমরা প্রতি বছর পাঁচ হাজার গাড়ি উৎপাদন করব৷ ইলেট্রিক গাড়ি, পিকআপ, লড়ি, ট্রাক সকল গাড়িতেই একদিন মেইড ইন বাংলাদেশ লেখা থাকবে সে আশাবদই তিনি ব্যাক্ত করেন।
কোম্পানিটি কতদূর যাবে তা আজ কেও না জানলেও বাংলাদেশের মাটিতে বিদেশী কোম্পানিগুলোর একক আধিপত্য কমিয়ে নিজ দেশ যদি স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে ত ক্ষতি কোথায়?
মুহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ খাঁন (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)