কে এই জুনায়েদ আল হাবিব!

হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার অভিযানে এবার ধরা পড়েছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জুনায়েদ আল হাবিব।
গত ১৭ এপ্রিল শনিবার, আলোচিত বক্তা মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবকে রাজধানীর বারিধারা জামিয়া মাদানিয়া মাদরাসা থেকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওইদিন সন্ধ্যায় মতিঝিল, রমনা ও লালবাগ বিভাগ গোয়েন্দা পুলিশের যৌথ দল তাকে গ্রেফতার করে।
আল্লামা জুনায়েদ আল হাবিব হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগরীর সভাপতি ছাড়াও কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এছাড়া তিনি জমিয়ত ই উলামায়ে ইসলামের সহ-সভাপতি ও ঢাকার জামিয়া কাসেমিয়া আশরাফুল উলুম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
জানা যায়, ২০১৩ সালের, ঢাকা অবরোধে যুক্ত থাকার অভিযোগেই গ্রেফতার করা হয়েছে জুনায়েদ আল হাবিব কে। উল্লেখ্য ২০১৩ সালের ৫ মে, ঢাকা অবরোধ করে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। এ অবরোধ কর্মসূচির নামে লাঠিসোটা, ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন ও আরামবাগসহ আশপাশের এলাকায় যানবাহন ও সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে হেফাজতের কর্মীরা। এ ঘটনায় পল্টন থানায় মামলা করা হয়।
মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম গণমাধ্যমকে বলেন, “শনিবার বিকেলে বারিধারা এলাকার একটি মাদরাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের হেফাজতের সহিংসতার ঘটনায় একাধিক মামলা রয়েছে”।
পরবর্তীতে ১৮ এপ্রিল রবিবার, ২০১৩ সালের নাশকতার মামলায় আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন তিনি। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক আল্লামা জুনায়েদ আল হাবিবের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রবিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিনুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন।
জানা যায়, “একজন আলেমের গায়ে হাত দিয়ে দেখেন”- সম্প্রতি এমন বক্তব্য দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করেন জুনায়েদ আল হাবিব।
উল্লেখ্য স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতায় মাঠে নামে হেফাজত। ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতার দিনে হেফাজতের কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন মারা যান। এ নিয়ে হেফাজতের সাতজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ সারাদেশে প্রায় শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “ভিডিও ফুটেজ ও ছবি দেখে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সোমবার রাতে আরও ৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের অধিকাংশই হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থক। এছাড়া তাদের মধ্যে ছাত্রদল, যুবদল ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীও রয়েছেন”।
লেখক- সায়মা আফরোজ (নিয়মিত কন্ট্রিবিউটর AFB Daily)
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়