পাপ নাকি বাপকেও ছাড়ে নাঃএকটি বার্মিজ উপাখ্যান

পাপ নাকি বাপকেও ছাড়ে না। মায়ানমারের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিশ্ববাসীকে বোধহয় আবারো সে উক্তিটির কথাই মনে করিয়ে দিয়ে গেল। কিছুদিন আগে মিয়ানমারের নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে সে দেশের সামরিক বাহিনী বিদ্রোহ করে দেশটির ক্ষমতা কুক্ষিগত করে।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ভাবে বার্মিজ এ সেনাবাহিনীকে চিহ্নিত করা হয়েছে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে । অং সাং সুচি নিক্ষিপ্ত হয়েছেন ক্ষমতা থেকে।


দেশটির জনগণ সামরিক শাসনে টিকে থাকতে না পেরে নেমেছে গণ-আন্দোলনে। শুরু করেছে “everything will be ok” স্লোগান সহ আন্দোলন। যে আন্দোলন কারীদের উপরেই নির্বিচারে গুলি ছুড়ে যাচ্ছে দেশটির সামরিক সরকার, যার ফলস্বরূপ শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ষাটোর্ধ্ব মানুষ মৃত্যু বরণ করেছে। তেমনি এক বিদ্রোহী ১৯ বছর বয়সী তরুণী “কেয়াল সিন”। মৃত্যুর আগেই যার টিশার্টে সে লিখে গিয়েছিল ব্লাড গ্রুপ সহ, মারা গেলে কি কি করতে হবে তার নির্দেশনা। কিছুক্ষণের মাঝেই যে তরুণীর প্রাণ অকালে ঝরে পরে সে বার্মিজ সেনাবাহিনীর হাতে।

এখন বার্মিজ সেনাবাহিনীর অত্যাচারের স্টিমরোলার যখন নিজ কাধে এসে পড়ল অকাতরে নিজেদের প্রাণ বিলিয়ে দিতে পারলেও কিছুদিন আগেই তাদের স্বজাতি রোহিঙ্গা দের যখন মশা মারার মত মারা হচ্ছিল, তাদের মেয়েদের ধর্ষন করা হচ্ছিল, পিতার সামনে মেয়েকে, ছেলের সামনে মা’কে মেরা ফেলা হচ্ছিল তখন এ জাতিই ত চুপচাপ সে ধংসযজ্ঞ দেখছিল। প্বার্শবর্তী দেশটির জণগণ তাদের সবটা উজার করে দিলেও নিজ দেশের জনগণের প্রতি একবারও হৃদয় কাঁপেনি বার্মিজ জনগণের । ক্ষমতা হতে নিক্ষিপ্ত হওয়া এই অং সাং সুচিই ত কিছুদিন আগে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বার্মিজ সেনাবাহিনীর পক্ষে সাফাই গেয়ে এসেছিলেন। এখন সে বাহিনীটিই সে দেশটির সবচেয়ে বড় বিষফোড়া হয়ে দেখা দিয়েছে, হত্যা করে যাচ্ছে একের পর এক মানুষকে।

ইতিহাস যেমন পাকিস্তানকে ক্ষমা করেনি ঠিক একইভাবে মায়ানমার জনগণকেও হয়ত ক্ষমা করবে না। এজন্যই হয়ত লোকে বলে “পাপ বাপকেও ছাড়ে না “
মুহিব্বুল্লাহ খাঁন (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
আরো পড়ুন;
সুলতান মাহমুদের সোমনাথ অভিযান কি শুধু অর্থের জন্যই ছিলোঃ-https://cutt.ly/yl0sZbT
ভুলে যাওয়া আমেরিকান মুসলিমদের ইতিহাস;https://cutt.ly/Gk70CYo