
জেনারেল আজিজ। আল জাজিরার একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের পর হতে বর্তমান বাংলাদেশী সমাজে সর্বাধিক আলোচিত একটি নাম এই জেনারেল আজিজ আহমেদ । আজ আমরা তার সম্পর্কেই খানিক জানার চেষ্টা করব।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বর্তমান এ সেনাপ্রধান ১৯৬১ সালে পিতা আব্দুল ওয়াদুদ ও মা রেনুজা বেগমের ঔরসে চাঁদপুর মতলবের সুলতানাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই ডিফেন্স পরিবারে লালন পালন হয়েছে তার৷ অদ্ভূতভাবেই জেনারেল আজিজের পিতাও ছিলেন বাংলাদেশ এয়ারফোর্স এর একজন সদস্য । জেনারেল আজিজ আহমেদেরা মোট পাঁচ ভাই ছিলেন । আনিস আহমেদ, হারিছ আহমেদ, টিপু আহমেদ, তোফায়েল আহমেদ জোসেফ। জেনারেল আজিজের শৈশবকাল কাটে মোহাম্মদপুরে।
শিক্ষাজীবনে জেনারেল আজিজ মোহাম্মদপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। এছাড়াও ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় হতে তিনি টেক্সটাইল টেকনোলজির উপর ডিপ্লোমা করেন।
এইচএসসি পাশ করে জেনারেল আজিজ সেনাবাহিনীর জন্য নির্বাচিত হন। এরপর ট্রেনিং এর জন্য বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে যোগদান করলে ১৯৮৩ সালে তাকে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি (চট্টগ্রাম) হতে সেনাবাহিনীর গোলন্দাজ রেজিমেন্টে কমিশন দেয়া হয়। এরপর ধীরে ধীরে আজিজ আহমেদ গোলন্দাজ ইউনিটের ক্যাপ্টেন এবং পরে গোলন্দাজ রেজিমেন্টের বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০০৩ সালে জেনারেল আজিজ কর্নেল পদে পদোন্নতি সহ বিজিবির ঢাকা সেক্টরের আধিনায়ক পদে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। পরবর্তীতে ব্রিগেডিয়ার পদে কুমিল্লা সেনানিবাসে দায়িত্ব পেলে সেখানে ৩৩ তম গোলন্দাজ ব্রিগেডের অধিনায়ক রূপে দায়িত্ব পালন করেন তিনি । এর কিছুদিন পরই জেনারেল আজিজ মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি পান এবং ৩৩ তম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অতঃপর সেখান থেকে জেনারেল আজিজ আহমেদ ২০১২ সালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের মহাপরিচালক রূপে অধিষ্টিত হন। তিনি বিজিবির মহাপরিচালক হিসেবে ২০১২ হতে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষে জেনারেল আজিজ ২০১৮ সালের ১৮ জুন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।

জেনারেল আজিজ তার কর্মজীবনে গোলন্দাজ রেজিমেন্টের একজন সাধারণ যোদ্ধা হতে নিজেকে নিয়ে গেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ে। তার এ ঘটনাবহুল জীবনে তিনি ১৯৯০ সালে হওয়া উপসাগরীয় যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়াও সেনাজীবনের সায়াহ্নে এসে বেশ বিতর্কেরও মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। তবুও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তার মেয়াদকালে বেশ অভূতপূর্ব কিছু সংস্কারের সাক্ষী হয়েছে। তার মেয়াদকালেই বাঙালি সেনাবাহিনী UN পিস কিপিং কার্যক্রমে রেকর্ড ব্রেকিং হারে অংশগ্রহণ করছে। ২০১৮ সালের ২৫ জুন হতে শুরু হওয়া জেনারেল আজিজের সেনাপ্রধান হিসেবে মেয়াদকাল ২০২১ সনের ২৫ জুনই শেষ হতে চলেছে।
মুহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ খাঁন (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
আরো পড়ুন;
আল-যাযিরার প্রতিবেদনে দেখা যাওয়া কে এই তাসনীম খলীল? – https://cutt.ly/ulURAjy
ভুলে যাওয়া আমেরিকান মুসলিমদের ইতিহাসঃ- https://cutt.ly/Gk70CYo
নারীত্বের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন বিবি খাদিজা (রা)- https://cutt.ly/XkCLnzf